• Today: February 10, 2025

“আনোয়ারা উদ্যান, পান্থকুঞ্জ পার্ক, তাজউদ্দীন আহমদ পার্ক ও ওসমানী উদ্যান সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার” দাবিতে এক নাগরিক সমাবেশ ও লংমার্চ

10 February, 2025
32

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), গ্রীন ভয়েস, আরডিআরসি, পরিজা, গোলাপবাগ মাঠ রক্ষা আন্দোলন, জুরাইন ফুটবল একাডেমি, জাগরণী ক্রীড়াচক্র এবং পরিবেশ বার্তা’র যৌথ উদ্যোগে আজ, ২ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ফার্মগেটের আনোয়ারা পার্কের সামনে (তেজগাঁও কলেজের বিপরীতে) “আনোয়ারা উদ্যান, পান্থকুঞ্জ পার্ক, তাজউদ্দীন আহমদ পার্ক ও ওসমানী উদ্যান সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার” দাবিতে এক নাগরিক সমাবেশ ও লংমার্চ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। লংমার্চটি আনোয়ারা উদ্যান থেকে শুরু হয়ে পান্থকুঞ্জ পার্কে গিয়ে শেষ হয়।

কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার। উপস্থিত ছিলেন বাপার সহ-সভাপতি মহিদুল হক খান, সহ-সভাপতি ও বেনের বৈশ্বিক সমন্বয়কারী ড. মো. খালেকুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এবং গ্রীন ভয়েসের প্রধান সমন্বয়ক আলমগীর কবির, গ্রীন ভয়েসের সহ-সমন্বয়ক হুমায়ুন কবির সুমন, মোনছেফা আক্তার তৃপ্তি, শাকিল কবির ও তিতলী নাজনিন।

এছাড়াও তেজগাঁও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক শামীমা ইয়াসমিন, ফাইনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান রেহানা শারমীন, ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক ফাতেমা আনিছ ও ড. হারুন-উর রশিদ, গ্রীন ভয়েস তেজগাও শাখার সংগঠক রাসেল সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচিতে গ্রীন ভয়েসের তেজগাঁও কলেজ শাখা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ শাখা, ঢাকা কলেজ শাখা, বাংলা কলেজ শাখা, হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ শাখা, এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি শাখা, সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখা এবং বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ শাখাসহ ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। 

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, আনোয়ারা উদ্যানসহ দেশের সকল মাঠ ও পার্ক সর্বসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করে দিতে হবে। মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার পরিবেশ নিশ্চিত করণের জন্য পার্ক -মাঠ ও উদ্যান থেকে সকল নির্মাণ সামগ্রী অপসারণ করে খেলার ও চলাচলের পরিবেশ নিশ্চত করতে হবে। তিনি আরো বলেন আনোয়ারা উদ্যানের চারিদিকে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্টান আছে এখানকার ছাত্রদের উম্মুক্ত বায়ু সেবনের এই উদ্যান দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা দ্রুতই এই নির্মাণ সামগ্রীর অপসারণের দাবী জানাই।

ড. মো. খালেকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান ও প্রাকৃতিক জলাধার রক্ষা করার জন্য অনেক আইন থাকা সত্ত্বেও অতীতের সব সরকার উন্নয়নের নামে এইগুলি ধ্বংস করেছে এবং নানাভাবে দখল করেছে। বর্তমানের পরিবেশ স্বপক্ষ সরকার নিশ্চয় একই কাজ করবেনা। আমি আহবান জানাচ্ছি যেন বর্তমানের পরিবেশবাদী সরকার দখলদারের ভুমিকায় অবতীর্ণ না হয়। তারা যেন স্বৈরাচার বিরোধী এবং বৈষম্য-বিরোধী আন্দোলনের স্পৃহার সাথে এক হয়ে সকল পার্ক, উদ্যান, এবং জলাভূমি দখলমুক্ত করে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেন।

মো. আলমগীর কবির বলেন  ২০০৪ সালে দেশের সকল পার্ক-মাঠ রক্ষায় একটি আইন করা হয়েছিল। সেই আইনে স্পষ্ট বলা আছে খেলার মাঠে কোন ধরণের স্থাপনা করা যাবেনা। কিন্তু তৎকালিন ফেসিষ্ট সরকারই উন্নয়নের নামে দেশে একের পর এক আইন ভঙ্গ করে খেলার মাঠ-পার্ক উদ্যান বিনষ্ট করেছে। রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেটে শহীদ আনোয়ারা উদ্যান ছিলো এলাকার মানুষের কাছে আশীর্বাদস্বরূপ। একসময় হাজারো মানুষ ছোট্ট উদ্যানটিতে হাঁটাচলা করতো, শিশুরা খেলতো, কম আয়ের মানুষ ক্লান্তি দূর করতে জিরিয়ে নিতো। এই উদ্যানটিতে মেট্রোরেলের স্টেশন করায় এখানকার সকল গাছ কাটা হয়েছিল। কিন্তু মেট্রো রেলের কাজ শেষ হওয়ার পরেও অফিস এবং অবকাঠামো রাখায় বন্ধ রয়েছে গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি বিজড়িত উদ্যানটি। বছর কয়েক আগেও ফার্মগেটের গা ঘেঁষা ছোট্ট এ উদ্যানটি ছিলো সবুজ গাছ গাছালিতে ভরা। পান্থকুঞ্জ পার্কে এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজের ফলে পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য বিপন্ন হয়েছে। পার্কের গাছ কেটে গড়েতোলা হয়েছে অনেক স্থাপনা। যা অত্রএলাকার জনসাধারণের পরিবেশগত সমস্যার সৃষ্টি করেছে। তিনি অতি দ্রুত সকল পিলার অপসারণের দাবি জানান।

অধ্যাপক শামীমা ইয়াসমিন বলেন, সুন্দর পরিবেশই দেশের সুন্দর ভবিষ্যত গড়ে তোলে। আনোয়ারা উদ্যান থেকে সকল ধরনের স্থাপনা ও নির্মাণ সামগ্রী দ্রুত অপসারণ করে এখানে সকল মানুষের উম্মূক্ত বায়ু সেবনের দাবি জানান। তিনি আরো বলেন মেট্রোর কাজ শেষ হওয়ার পরেও কেন এই স্থাপনাগওলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছেনা। 

আজকের নাগরিক সমাবেশে থেকে নিম্মোক্ত দাবীসমূহ তুলে ধরা হয়: 

• শহীদ আনোয়ারা উদ্যান থেকে মেট্রোরেলের সকল সরঞ্জাম অপসারণ করে উদ্যানটি জনগণের 

জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।

• পান্থকুঞ্জ পার্কের অরণ্য ফিরিয়ে দিতে হবে। 

• কারওয়ানবাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাতিল করতে হবে।

• সবুজে ঘেরা ওসমাণী উদ্যান পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে।

• তাজউদ্দীন পার্কের ইজারা বাতিল কর।

• সকল মাঠের অভ্যন্তরের নতুন-পুরাতন সকল স্থাপনা অপসারণ করতে হবে। 

• সকল মাঠের অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে হবে। 

• দেশর সকল মাঠ থেকে দখলদারদের সম্পূর্ণভাবে উৎখাত করে মাঠে সকল মানুষের 

প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

Tags

Comment