• Today: February 22, 2025

খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ বাস্তবায়ন এবং "দেশের সকল মাঠ-পার্ক ও উদ্যানে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ও জন সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার দাবিতে" গ্রীন ভয়েস'র ছাত্র-যুব সমাবেশ

22 February, 2025
61

পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রীন ভয়েস এর উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার ০৯ জানুয়ারী, ২০২৫ সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব এর সামনে খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ বাস্তবায়ন এবং "দেশের সকল মাঠ-পার্ক ও উদ্যানে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ও জন সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার দাবিতে" ছাত্র-যুব সমাবেশের অনুষ্ঠিত হয়েছে।


গ্রীন ভয়েস এর প্রধান সমন্বয়ক জনাব আলমগীর কবির এর সভাপতিত্বে ও গ্রীন ভয়েস এর সহ সমন্বয়ক হুমায়ুন কবির সুমন এর সঞ্চালনায় ছাত্র-যুব সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন গ্রীন ভয়েস এর উপদেষ্টা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন  হোসেন প্রিন্স, গ্রীন ভয়েস এর উপদেষ্টা সিনিয়র সাংবাদিক শুভ কিবরিয়া, গ্রীন ভয়েস এর উপদেষ্টা ও জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি আন্দোলনের সদস্য সচিব রুস্তম আলী খোকন, পরিজার সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, জাহাঙ্গীর আলম, সমন্বয়কারী, বারসিক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক , আশিকুর রহমান জিম,কানিজ কুররাতুল আইন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল সহ-সমন্বয়ক জহির রায়হান রিপন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক  সভাপতি দীপক শীল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, বাহাউদ্দিন শুভ, গ্রীন ভয়েস পার্বত্য চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক সাচিনু মারমা, গ্রীন ভয়েস টেকনাফ উপজেলার সংগঠক আব্দুর রহিম, গ্রীন ভয়েস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সোহানা খাতুন, গ্রীন ভয়েস জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, গ্রীন ভয়েস এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান শুভ, গ্রীন ভয়েস ঢাকা কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, ইডেন মহিলা কলেজের সংগঠক নূসরাত ইমরোজ তিশা,গ্রীন ভয়েস তেজগাঁও কলেজের সংগঠক মেহেদী হাসান পলাশ ও শাহরিন সেঁজুতি, সরকারি তিতুমীর কলেজের সংগঠক কাজী সায়াদ বিন রাবি,মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের সংগঠক আবু সাইদ,হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের আহবায়ক রায়াতুল রিটু, ছাত্রনেতা দীপক শীল, বাহাউদ্দিন শুভ প্রমুখ। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন গ্রীন ভয়েস এর যুগ্ম সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম রাতুল, আরিফুর রহমান, শাকিল কবির, ফাহমিদা নাজনীন, কেন্দ্রীয় কার্যনিবাহী সদস্য আলী হোসেন ও স্বপন মাহমুদ।


সভাপতির বক্তব্যে আলমগীর কবির বলেন, খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ কে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে মাঠ-পার্ক, উদ্যানে উন্নয়নের নামে উসমানী উদ্যান গত ৬ বছর ধরে বন্ধ করে রেখেছে। ধানমন্ডি মাঠে জন সাধারণ প্রবেশ করতে পারছে না। তাজউদ্দীন আহমেদ পার্ক লিজ দেওয়া হয়েছে। সারা দেশের খেলার মাঠ  উদ্যান এবং পার্ক এর একই অবস্থা। ধানমন্ডি মাঠ সবুজ ভূমিটি একসময় উন্মুক্ত ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালে ধানমন্ডি ক্লাবের নাম পরিবর্তন করে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেড করার পরপরই মাঠটি ঘিরে ফেলা হয়। বন্ধ হয়ে যায় সর্বসাধারণের বিচরণ ও খেলাধুলা। ধানমন্ডি মাঠসহ সারা দেশে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তত্ত্বাবধানে থাকা খেলার মাঠগুলো আসলে সর্বসাধারণের এজমালি মালিকানাধীন সম্পত্তি। এর ওপর ব্যক্তির বা গোষ্ঠীর বা কোম্পানির মালিকানা চাপিয়ে দেওয়া লুণ্ঠনেরই আরেক নাম। 

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন  হোসেন প্রিন্স বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে অবস্থান ওসমানী উদ্যানের। এই উদ্যান রক্ষার জন্য এগারো হাজার গাছ রক্ষা আন্দোলন দুইযোগ আগে থেকেই দাবি উদ্যানটি রক্ষার জন্য দাবি  আসছে ২০১৮ সালের ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর গুলিস্তানের কাছে ওসমানী উদ্যানে ‘গোস্বা নিবারণী’ পার্কের উদ্বোধন করেন ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন। ১০ মাসেই সব কাজ শেষ করার কথা। ৬ বছর চলে গেলো তবু তাদের কাজ শেষ করতে পারেনি। কাজের কাজ শুধু লুটপাট হয়েছে,খরচ বাড়িয়েছে। জনগণের উদ্যান সর্ব সাধারণের জন্য কালক্ষেপন না করে উন্মুক্ত করে দিতে হবে।


জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি আন্দোলনের সদস্য সচিব রুস্তম আলী খোকন বলেন, রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেটে শহীদ আনোয়ারা পার্ক ছিলো এলাকার মানুষের কাছে আশীর্বাদস্বরূপ। একসময় হাজারো মানুষ ছোট্ট উদ্যানটিতে হাঁটাচলা করতো, শিশুরা খেলতো, কম আয়ের মানুষ ক্লান্তি দূর করতে জিরিয়ে নিতো। কিন্তু মেট্রো রেলের অফিস এবং অবকাঠামো রাখায় বন্ধ রয়েছে গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি বিজড়িত পার্কটি। বছর কয়েক আগেও ফার্মগেটের গা ঘেঁষা ছোট্ট এ উদ্যানটি ছিলো সবুজ গাছ গাছালিতে ভরা। সেখানে এখন রাখা হয়েছে নির্মাণ সামগ্রী।পান্থকুঞ্জ পার্কে এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজের ফলে পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য বিপন্ন হয়েছে। এহেন কর্মকান্ড অনতিবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।

গ্রীন ভয়েস এর উপদেষ্টা সিনিয়র সাংবাদিক শুভ কিবরিয়া বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) গুলশান মডেল টাউনের নকশা অনুযায়ী, ৮ দশমিক ৮৭ একর আয়তনের পার্কটির অবস্থান গুলশান ২ নম্বরের ১৩০-এ প্লটে। আগে নাম ছিল গুলশান সেন্ট্রাল পার্ক। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নতুন নামকরণ হয় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্ক। পার্কের ৫ দশমিক ৫৪ একর জায়গা অনেক দিন ধরে ইয়ুথ ক্লাবের দখলে। মাঠটি দখল মুক্তকরে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেবার দাবি জানাচ্ছি।

বারসিক এর সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্বাস্থ্য সম্মত নগরের জন্য  ১০-১২ ভাগ জলাভুমি এবং ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা জরুরী । আমাদের ঢাকার ২ কোটি মানুষের শহরে উদ্যান পার্ক খেলার মাঠসহ খেলা জায়গা আছে মাত্র ৯ ভাগ আর জলাভূমি আছে ৩ ভাগ মাত্র। এটা বাসযোগ্য নগরের মানদন্ড হতে পারে না। এই শহরের সকল পার্ক, খেলার মাঠ, উদ্যান রক্ষার যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সেটাকে গুরুত্ব দিতে হবে এই সরকারকে। কারণ বনভূমি কমে যাওয়ার কারণে গ্রামের চেয়ে নগরে ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে এবং এর প্রভাব পরেছে আমাদের শ্রমজীবী এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের উপর। এই  বর্ধি ত তাপ কমানোর জন্য নগরের সকল মাঠ পার্ক  উদ্যা্ন সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। পার্কে র মধ্য থেকে সকল ধরনের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। এবং এই শেহর শুধুমাত্র মানুষ নয়, সকল প্রানীর শহর হিসেবে গড়ে তূলতে হবে।

পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পরিজা)’র সাধারণ সম্পাদক , ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল বলেন, বিগত ৫৩ বছরে বাংলাদেশের পরিবেশকে পরিকল্পিত ভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। উন্নয়ন আগে না পরিবেশ আগে এই বিতর্ককে সামনে এনে বিগত স্বৈরশাসকেরা পরিবেশকে বিষয়টিকে দমন করেছে। আনোয়ারা উদ্যান, পান্থকুঞ্জ, তাজউদ্দিন পার্ক তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আজকে সারাদেশের পার্ক, মাঠকে উদ্ধার করে জনগণের ব্যবহারের জন্য গণমুখি চিন্তার বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, পরিবেশ উপদেষ্টা পরিবেশ আন্দোলনের মানুষ আর তাই তার কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশাও বেশি। সকল পরিবেশবাদী সংগঠনকে এক হয়ে সারাদেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আর কোন বিকল্প নেই। 


সমাবেশ থেকে নিন্মোক্ত দাবি উত্থাপন করা হয়: 

•শহীদ আনোয়ারা উদ্যান জন সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। •পান্থকুঞ্জ পার্কের অরণ্য ফিরিয়ে দিতে হবে। 

•কারওয়ানবাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাতিল করতে হবে।

•সবুজে ঘেরা ওসমাণী উদ্যান পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। •তাজউদ্দীন পার্কের ইজারা বাতিল কর।

Tags

Comment